ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও হেনস্থার অভিযোগ পাওয়া গেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা (এইচ.আর.এম) বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহার বিরুদ্ধে।
সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) অশ্লীল ও অনৈতিক প্রস্তাব, কুরুচিপূর্ণ মেসেজ এবং রাজি না হওয়ায় একাডেমিক কাজে বিঘ্নসহ নানাভাবে হয়রানি করা হয় বলে উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।
এর আগে, গতকাল রোববার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পরিচালিত বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও পেইজে ভাইরাল হয় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিভিন্ন অনৈতিক প্রস্তাবের স্কিনশর্ট ও চ্যাট।
আজ সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) অভিযুক্ত শিক্ষক ও জড়িতদের বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন শুরু করেন মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রায় ১ ঘণ্টা প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ করে রাখে তারা।
পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের আশ্বাসে তালা খুলে দিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভুক্তভোগীর পক্ষে অভিযোগ পত্র জমা দেন। এসময় আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বরাবর ৬ দফা দাবি পেশ করেন।
দাবিগুলো হলো- অভিযুক্ত শিক্ষকে চাকরিচ্যুত করতে হবে, অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, অনতিবিলম্বে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে, ভবিষ্যতে এ ঘটনার কোনো বিরুপ প্রভাব না পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, ভর্তির পর থেকেই তার বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহা ভুক্তভোগীকে নানা ধরনের কুরুচিপূর্ণ মেসেজ দিতেন। রাতে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ,বাসায় কেউ না থাকলে আসতে বলা, অফিসে ডাকা এবং পাশাপাশি অশ্লীল ছবি ও ভিডিও লিঙ্ক দিয়ে বিরক্ত করতেন ওই শিক্ষক। ভুক্তভোগীকে তার কোর্সে ভালো নম্বর পাইয়ে দেওয়ার অফারও দিয়েছেন বহুবার। কিন্তু রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে ইন্টার্নশীপ রিপোর্ট আটকে রাখাসহ নানাভাবে হয়রানি করেন অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহা।
এসব হয়রানির বিষয়ে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর কাছে মৌখিক অভিযোগ করলে তিনি বিভাগের অন্য দুইজন শিক্ষকের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইলে একাধিকবার কল দিলে, তা বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর একাধিকবার অফিসে গিয়ে খোঁজ নিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনায় অন্য অভিযুক্ত ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তাদের অভিযোগ বিভাগ বরাবর দিলে আমরা ব্যবস্থা নিতাম। আমি তাদের ডেকেছি, কিন্তু তারা আমার কাছে আসে নি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড সৌমিত্র শেখর বলেন, এটি খুবই বিব্রতকর ব্যপার। আমার কাছে ছেলে-মেয়েরা এসেছে। আমি আগামীকাল ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।