Monday, October 7, 2024

সর্বশেষ

অপরাপর

জাকের আলীর অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ের পরও ৩ রানে হারলো বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০৭ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থামে ২০৩ রানে। মাত্র ৩ রানে হেরে সিরিজে স্বাগতিক শিবির পিছিয়ে পড়লো ১-০ ব্যবধানে। জাকের আলীর অবিশ্বাস্য ইনিংস আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো ফিফটির পরও তীরে এসে তরী ডুবলো।

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর জাকের আলীর সঙ্গী হন শেখ মাহেদী। শুরুতে কিছুটা সময় নেন এই অলরাউন্ডার। কিন্তু থেমে ছিলেন না জাকের। অন্য প্রান্তে লঙ্কান বোলারদের তুলোধুনো করে মাত্র ২৫ বলে ফিফটি তুলে নেনে তিনি। জুটি থেকে আসে মাত্র ২৭ বলে ৬৫ রান। ১১ বলে ১৬ রান করে মাহেদী আউট হলে ভাঙে এই জুটি।

জাকেরের মারে শেষ ওভারে ব্যবধান কমে আসে ৫ বলে ১২-তে। মাহেদীর পর ক্রিজে এসে রিশাদ ২ বলও টিকতে পারেননি। ওভারের প্রথম বলে আউট হয়ে উল্টো বিপদ বাড়ান রিশাদ। তাসকিন এসে সিঙ্গেল দিয়ে স্ট্রাইক দিলেও জাকের আলীকে সাজঘরে ফিরতে হয় ৩৪ বলে ৬৮ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে। শানাকাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে আসালঙ্কার দারুণ ক্যাচে আউট হন।

শরিফুল এসেই চার মেরে জয়ের আশা বাড়ান। কিন্তু শেষ করতে পারলেন সতীর্থ তাসকিন। শেষ ওভারে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে ৮ রান নিতে পারে। ৩ রানে হেরে সিরিজ শুরু করলো স্বাগতিক শিবির।

এর আগে মাহমুদউল্লাহ-জাকের জুটি থেকে মাত্র ২৯ বলে ৪৭ রান আসে। মাত্র ২৯ বলে ৫২ রানে মাহমুদউল্লাহ আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তাদের আগে শুরুতে লিটন-সৌম্যরা ভালো করতে পারেননি। লঙ্কানদের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ম্যাথুস, বিনুরা ও শানাকা।

ঝড় তুলে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ, জাকের-মেহেদীতে ভরসা

এসে প্রথম বল থেকেই মারলেন। তাতে মাত্র ২৭ বলে ফিফটি। এমন ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুই’শ তাড়ার স্বপ্ন দেখছিল যখন দেশ, তখনই বিদায়। ১১৫ রানের মাথায় মাহমুদউল্লাহর (৫২) বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন শেখ মাহেদী।

মাহমুদুল্লাহ বিদায় নিলে রানের চাক সচল রাখেন জাকের। ১৫ তম ওভারে হাঁকিয়েছেন টানা দুই ছয়। ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৩৯। ৩০ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৬৮। জাকের ৩১ ও মেহেদী ৫ রানে অপরাজিত আছেন।

শান্তর বিদায়, মাহমুদউল্লাহর দ্বিতীয় জীবন, চাপে বাংলাদেশ

দলের যখন জুটি ভীষণ প্রয়োজন, তখন বিদায় নিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অথচ মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে দিয়েছিলেন দারুণ জুটি গড়ার আভাস। পাথিরানার শর্ট বলে ভুল শটে তুলে দেন আকাশে। ৬৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী জাকের আলী।

দশম ওভারে দ্বিতীয় জীবন পান মাহমুদউল্লাহ, সহজ ক্যাচ মিস করেন সাদিরা। মাত্র ১৬ বলে ৩২ রান নিয়ে ব্যাটিং করছেন তিনি। বাংলাদেশের শেষ দশ ওভারে প্রয়োজন ১৩৪ রান। এর আগে মাত্র ৩০ রানে ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিক শিবির।

পাওয়ার প্লেতে উইকেটের মিছিলে দিশেহারা বাংলাদেশ

ইনিংসের তৃতীয় বলে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে বিপদের শুরু করেন লিটন দাস। শূন্য রানে ফেরেন তিনি। শূন্যরানে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার এসে দারুণ শুরু করেও ১২ রানের বেশি করতে পারেননি। অহেতুক উইকেট বিলিয়ে দেন। সৌম্যর পর ক্রিজে এসে অসাধারণ ছয়ে বড় কিছুর বার্তা দিয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু তার যেন বড্ড তাড়া। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে খোঁচা দিয়ে বসেন। ৮ রানে বিদায়। ৩০ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এসেই হাঁকান ছয়। দুই’শ-এর বেশি রান তাড়া করতে হলে জুটির কোনো বিকল্প নেই। পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪৪ রানে ৩ উইকেট।

মোস্তাফিজ-শরিফুলদের এলোমেলো করে শ্রীলঙ্কার দুই’শ পার

ফিফটির পর কুশলের আউটে যেন শ্রীলঙ্কার রানের গতি আরও বেড়েছে। সামারাবিক্রমার সঙ্গী হয়ে ঝড় তোলেন হাসারাঙ্গার পরিবর্তে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া চারিথ আসালঙ্কা। দুজনে মাত্র ৩৩ বলে যোগ করেন ৭৩ রান। সামারা ৬১ ও আসালঙ্কা মাত্র ২১ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন। ৪৩ বলে ফিফটি করেন সামারা। তাতেই লঙ্কানদের স্কোর দুই’শ পার হয়। নির্ধারিত ওভার শেষে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রান করে শ্রীলঙ্কা।

কুশলের ফিফটিতে বড় রানের ভিত পেয়েছিল লঙ্কানরা। সামারার সঙ্গে তৃতীয় উইকেটের জুটিতে যোগ করেন ৯৬ রান। এর আগে ৩৭ রানে সাজঘরে ফেরেন দলীয় দুই ওপেনার। পাওয়ার প্লে’তে দারুণ শুরু করেও বাংলাদেশ খেই হারিয়ে ফেলে।

সবচেয়ে খরুচে ছিলেন শরিফুল। তিনি ৪৭ রান দেন। তাসকিন খরচ করেন ৪০ রান। দুজনে ১টি করে উইকেট নেন। মোস্তাফিজ ৪২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। রিশাদ ৩২ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। আরেক স্পিনার মাহেদীও ছিলেন খরুচে, তিনি ৩ ওভারে ৩০ রান দেন।

রিশাদ স্বস্তি ফেরালেও বড় সংগ্রহের পথে শ্রীলঙ্কা

রিশাদ হোসেনকে উড়িয়ে মারতে গয়ে লং অফে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দারুণ ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন কুসল। ততক্ষণে শ্রীলঙ্কাকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন। মাত্র ২৮ বলে ফিফটি করে শেষ পর্যন্ত থামেন ৫৯ রানে। তার আউটে ভাঙে সামারাবিক্রমার সঙ্গে গড়া ৬১ বলে ৯৬ রানের জুটি। দুজনের এই জুটিতে ভর করে ১৫ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেট ১৩৬ রান। ফিফটির পথে থাকা সামারাবিক্রমার সঙ্গী অধিনায়ক আসালঙ্কা। ৪৫ রানে ব্যাট করছেন সামারা।

কুশল-সামারায় শ্রীলঙ্কার পাল্টা আক্রমণ

শুরুতেই দুই উইকেটের পতন হয়েছিল। তবে ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় নেননি কুসল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর শুরু হয় দুজনের পথচলা। দুজনের জুটি ফিফটি থেকে মাত্র ৮ রান দূরে। ৩৩ বলে যোগ করেন ৪২ রান। 

সামারাবিক্রমা থিতু হওয়ায় চেষ্টায় আছেন, অন্যদিকে হাতখুলে খেলছেন কুশল। ১০ ওভার শেষে তাদের দলীয় রান ২ উইকেটে ৭৯। কুশল ২৩ বলে ৩২ ও সামারা ২১ বলে ২২ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।

শরিফুল-তাসকিনে পাওয়ার প্লে’তে দারুণ বাংলাদেশ

প্রথম বলে ব্যাটের কানায় লেগে চার। দ্বিতীয় বলে আর সুযোগ দেননি পেসার শরিফুল ইসলাম। আউটসাইড অফের বলে কাভারে চালিয়েছিলেন আভিস্কা ফার্নান্দো। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় লিটন দাসের গ্লাভসে। ২ বলে ৪ রানে ফেরেন আভিস্কা।

নতুন ব্যাটার কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে এগোতে থাকেন কামিন্দু মেন্ডিস। দুজনে দেখে-শুনে খেলছিলেন। শরিফুলের করা তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে কুশল মেন্ডিসের পায়ে লাগে, আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউয়ের পথে হাঁটেন শান্ত। তবে বল লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পিচ করাতে বাংলাদেশের পক্ষে আসেনি।

শেখ মাহেদীর করা চতুর্থ ওভারে ১ ছয় ১ চারে ১১ রান নেয় সফরকারীরা। তবে পঞ্চম ওভারে এসে কামিন্দুকে সাজঘরে পাঠান তাসকিন। মিড উইকেটে দারুণ ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার। ফ্রন্ট ফুটে এসে ক্রস ব্যাট চালিয়েছেন কামিন্দু, টাইমিংয়ে গড়বড় করে ১৯ রানে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ক্রিজে কুশলের সঙ্গী হন সামারাবিক্রমা।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজুকে আনেন শান্ত। ১ চারে মাত্র ৫ রান দেন তিনি। চার বোলার ৬ ওভার করে প্লাওয়ার প্লে-তে দিয়েছেন ৪৫ রান, নিয়েছেন ২ উইকেট।

টস জিতে বোলিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে জাকের

চায়ের নগরী সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লড়বে বাংলাদেশ। দ্বীপ রাষ্ট্রটির সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে এই সিরিজ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায় ।

একাদশে জাকের আলী
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আলোচিত ব্যাটার শেষ মুহুর্তে আলিস আল ইসলামের পরিবর্তে স্কোয়াডে ডাক পান জাকের আলী অনিক। প্রথম ম্যাচেই তাকে সুযোগ দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। গত বছর এশিয়ান গেমসে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

বাংলাদেশের একাদশ:
লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শেখ মাহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কার একাদশ:
কুসল মেন্ডিস, আভিষকা ফার্নান্দো, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালঙ্কা (অধিনায়ক), অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, কামিন্দু মেন্ডিস, দাসুন শানাকা, আকিলা ধনঞ্জয়া, মাহিশ থিকশানা, বিনুরা ফার্নান্দো ও মাথিশা পাথিরানা।

শান্ত-যুগে বাংলাদেশ
তিন সংস্করণে অধিনায়ক হিসেবে শান্ত যুগে পা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে এই বাঁহাতি তরুণ ব্যাটারকে বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিশ্বকাপের পর থেকে আদতে শান্তর নেতৃত্বেই তিন সংস্করণে খেলেছে বাংলাদেশ।

গত বছর তিন ফরম্যাটে ৪২ ম্যাচে ৪৪ ইনিংসে শান্তর রান ১৬৫০। বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান এখন পর্যন্ত এক বছরে পাঁচ সেঞ্চুরি করেননি। শান্ত আগের সব রেকর্ড ভেঙে পাঁচ সেঞ্চুরি করেন। সঙ্গে তার নামের পাশে আছে ৯ ফিফটি ছোঁয়া ইনিংস। তার ব্যাটিং গড়ও চমকপ্রদ, ৪২.৩০।

১০ বছর পর
১০ বছর পর প্রথম পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসেছে শ্রীলঙ্কা। মাঝে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এলেও পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলা হয়নি। এবার দুই দল তিনটি করে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে এবং দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে। সিরিজটি পুরোটাই হচ্ছে ঢাকার বাইরে। টি-টোয়েন্টি সিলেটে। ওয়ানডে চট্টগ্রামে। সিলেট ও চট্টগ্রামে একটি করে টেস্ট।

মুখোমুখি দেখা
টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর আগে ১৩ ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। তাতে জয়ের পাল্লা অবশ্য লঙ্কানদের দিকেই বেশি ভারী। তারা জিতেছে ৯ ম্যাচ। বাংলাদেশের জয় তাদের প্রায় অর্ধেক, ৪ ম্যাচ। আর বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে কোনো সিরিজেই হারাতে পারেনি।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পরিসংখ্যানও কথা বলছে লঙ্কানদের হয়ে। এই মাঠে দুই দল একটি ম্যাচই খেলেছিল। তাতে দুই দলের একমাত্র লড়াইয়ে জয় পেয়েছিল লঙ্কানরা। আজ এই মাঠে জয়ের হিসেবেও সমতা আনার চেষ্টা থাকবে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles