মা- কথাটি খুব ছোট। এতো ছোট্ট শব্দের অপার শক্তি আবারও প্রমাণ হলো। চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা যখন হেরে যাচ্ছিল, তখন জিতে গেল মাতৃস্নেহ। মায়ের মুখে ‘জোকস ’বা কৌতুক শুনে ৫ বছরের কোমা থেকে ফিরলেন এক মার্কিন নারী। তার নাম জেনিফার ফ্লিওয়েলেন।
২০১৭ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পেয়ে কোমায় চলে যান। এতদিন ধরে মেয়ের নিস্পন্দ শরীরটাকে আগলে রাখতেন মা পেগি মিন্স। প্রতিদিন যেতেন হাসপাতালে, মেয়ের সঙ্গে কথা বলতেন। বিশ্বাস করতেন, মেয়ে একদিন জেগে উঠবেই। এ জন্য নানা রকম গল্প বলতেন, জোকসও শোনাতেন। হঠাৎ একদিন তাতেই ঘটল ‘মিরাকল’। ‘কাঁপুনি’ দিয়ে জেগে উঠলো মেয়ে।
ঘটনাটি বেশ পুরনো, তবে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে। ‘পিপল’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৬০ বছরের পেগি জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ২৫ আগস্টে কোমা-মুক্ত হন জেনিফার। যখন ও জেগে উঠল, আমি প্রথমে রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কারণ ও হাসছিল।
তখন জেনিফারের শরীরে কাঁপুনি দিচ্ছিল। কথা বলতে পারছিল না, তবে মাথা নাড়ছিল। তবে এটা সত্য, ওকে জেগে উঠতে দেখে বুঝেতে পেরেছেন যে স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।
পেগির ভাষায়, এতদিন যে দরজা আমাদের দুজনকে আলাদা করে রেখেছিল, তা যেন হঠাৎই খুলে গেল। আবার আমরা এক হয়ে গেলাম।
তবে কোমা-মুক্ত হলেও এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি জেনিফার।এখনও ঠিক করে কথা বলতে পারেন না তিনি। এমনকি নড়াচড়া করতেও সমস্যা হয়।
জেনিফারের চিকিৎসার খরচ জোগাতে সমাজমাধ্যমে একটি ‘গো-ফান্ড-মি’ পেজও খোলা হয়েছে।
জেনিফারের চিকিৎসকের ভাষায়, একে অলৌকিক ছাড়া আর কী-ই বা বলব? শুধু কোমা থেকে জেগে ওঠাই নয়, জেনিফার সুস্থতার দিকেও এগোচ্ছে। মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা যায়।
জেনিফারের ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত তার পুত্র জুলিয়ান। সম্প্রতি তার ফুটবল ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন জেনিফার। জুলিয়ান জানিয়েছেন, মা আমার সবচেয়ে বড় সমর্থক। দর্শকাসনে তাকে ফিরে পাওয়ার অনুভূতি বলে বোঝানো সম্ভব নয়।